লাল মনির হাটে এক নারী ট্রেন যাত্রিকে ধক্কা দিয় লাঞ্ছিত করে পুলিশ এই নিয়ে অভিযোগ উঠেছে পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে। এ সময় স্থানীয় এক সংবাদিক ঘটনাটি ভিডিও ধারণ করতে গেলে তাকেও লাঞ্ছিত করেন এবং গালা গালি করেন ওই পুলিশ সদস্যরা। কিছুক্ষণ পর ওই ট্রেন যাত্রীর সাথে পুলিশের বাকবিতণ্ডায় ওই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। ঘটনাটি জানাজানি হতেই পুলিশের আচরণ ও দায়িত্ব নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। তদন্ত করে বিচার দাবি করেছেন অনেকেই। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা রেলওয়ে স্টেশনে এ ঘটনাটি ঘটে।
জানা গেছে, আজ শুক্রবার ৩১মে, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা। তাই অনেকে একদিন আগে লালমনিরহাট গিয়ে থাকেন। সেই কারণে বুড়িমারী থেকে ছেড়ে আসা পার্বতীপুরগামী কমিউটার ট্রেনে যাত্রীদের ছিল উপচে পড়া ভিড়। এমন অবস্থায় গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে বুড়িমারী থেকে ছেড়ে আসা পার্বতীপুরগামী কমিউটার ৬৬ নম্বর ট্রেনটি বড়খাতা স্টেশনে দাঁড়ালে ২ নম্বর বগিতে উঠতে চেষ্টা করেন হাসিনা আক্তার, ফারজানা খাতুন ও লাবন্য আক্তারসহ কিছু যাত্রী। এ সময় ওই বগির গেটে দাঁড়িয়ে থাকা পোশাকধারী ৩ পুলিশ আসন নেই বলে তাদের উঠতে নিষেধ করেন। কিন্তু পরীক্ষার কারণে তাদের যেতেই হবে বলে গেট থেকে সড়ে যেতে বলেন যাত্রীরা। এক পর্যায়ে তাদের সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন ওই পুলিশ সদস্যরা। এ সময় ক্ষিপ্ত হয়ে যাত্রীকে ধাক্কা দেন ওই পুলিশ সদস্যরা। পুলিশের এমন আচরণ ক্যামেরাবন্দি করতে এগিয়ে গেলে স্থানীয় সাংবাদিক রবিউল হাসানের সাথেও বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন ওই পুলিশ সদস্যরা। এ সময় ওই সংবাদকর্মীকে অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ করে তাকেও মারতে আসেন ওই পুলিশ সদস্যরা। এমতাবস্থায় ট্রেন ছেড়ে দিলে চলে যায় পুলিশ সদস্যরা। কিন্তু ওই ট্রেনে প্রায় ৩০ জন পরীক্ষার্থী যাত্রী যেতে পারেনি।
এ বিষয়ে স্থানীয় সাংবাদিক রবিউল হাসান জানান, ট্রেনে আসন ছিল না। তবে দাঁড়িয়ে যেতে পারত পরীক্ষার্থী যাত্রীরা। কিন্তু ট্রেনের গেটে তিন পুলিশ দাঁড়িয়ে ছিল। তারা কোনো যাত্রীকে উঠতে দেয়নি। যাত্রীরা উঠতে চাইলে তাদের ধাক্কা দিয়ে লাঞ্ছিত করে পুলিশ সদস্যরা।
এ প্রসঙ্গে পাটগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের মাষ্টার মকছেদ বাবু বলেন, ‘বৃহস্পতিবার পার্বতীপুরগামী কমিউটার ৬৬ নং ট্রেনটিতে কোনো পুলিশ সদস্য বুকিং বা রির্জাভ করেননি। তাই যেকোনো যাত্রী যেকোনো ট্রেনের বগীতে উঠতে পারে।’
এ ব্যাপারে হাতীবান্ধা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) ওমর ফারুক বলেন, ‘ভিডিওটি দেখে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ঘটনাটি তদন্ত করে পুলিশ সদস্যদের চিহ্নিত করে প্রাথমিক তথ্য পাঠানো হয়েছে। পুলিশ সদস্যরা রংপুর রেঞ্জের রিজার্ভ ফোর্সের (আরআরএফ) সদস্য ছিলেন। পাটগ্রাম উপজেলা বুড়িমারী ক্যাম্পের দায়িত্ব পালন শেষে ওই ট্রেনে রংপুরে ফিরছিলেন তারা।