ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সুলতানপুরে চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচন নৌকার ডুবানোর নেতা ফারুকই নৌকার কাণ্ডারী

505

 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি\
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচন জমে উঠেছে। ৪ প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে ৩ জনকে সামনে রেখেই চলছে হিসেব-নিকেশ। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা হচ্ছেন আওয়ামীলীগের শেখ ওমর ফারুক (নৌকা), স্বতন্ত্র শেখ মো. মহসীন (আনারস), মো. সোহরাব খান (ঘোড়া) ও মো. সাকিরুল আলম খান (চশমা)। সোহরাব খান আর সাকিরুল পিতা-পুত্র। আগামী ২৫ জুলাই নির্বাচন। সুলতানপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফিরোজুর রহমান ওলিও পদত্যাগ করে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন করায় চেয়ারম্যানের এই পদটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। চেয়ারম্যান পদে ফিরোজুর রহমানের ছেলে শেখ ওমর ফারুক আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেয়েছেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ তিনি কখনো আওয়ামীলীগ করেননি। তবুও দলীয় প্রতীক কীভাবে তার কাছে যায়। শেখ ওমর ফারুক উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্যে তার পিতার সঙ্গে স্বতন্ত্র মনোনয়ন জমা দেন। পরে আবার প্রত্যাহার করে নেন। ফিরোজুর রহমান স্বতন্ত্র নির্বাচন করে উপজেলায় জয়ী হন। উপজেলা পরিষদের ওই নির্বাচনে প্রশাসনকে দিয়ে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী-সমর্থকদের নির্যাতন করে মাঠ ছাড়া করার অভিযোগ রয়েছে। ফারুক পিতার পক্ষে নির্বাচনী মাঠে ব্যাপক কাজ করেন। অভিযোগ রয়েছে তিনিই ছিলেন সদর উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নৌকার প্রার্থীর পরাজয়ের অন্যতম কারিগর। আওয়ামীলীগের মনোনয়ন এনে চমক দেখিয়েছেন ফারুক। প্রায় ৪ মাস আগে নৌকা ডুবানোর নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। এখন তিনিই আবার সেই নৌকার কাণ্ডারী হয়ে হাজির হয়েছেন ভোটারদের দুয়ারে। এ নিয়ে ভোটের মাঠে তার প্রতিদ্বন্দ্বীরাই কথা উঠিয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী সোহরাব খান বলেন, তাদের পোস্টারে লেখা আছে শেখ হাসিনা মনোনীত প্রার্থী। আসলে কথাটা বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ মনোনীত হওয়ার কথা। উপজেলা বা জেলা থেকে তার নাম পাঠানো হয়নি। তারপরও সে কীভাবে মনোনয়ন পেল সেটা কারো বোধগম্য নয়। আমি ফারুকের পিতা ফিরোজুর রহমানের ঘনিষ্ঠতম সহচর। ১৯৯৩ সনে সুলতানপুর ইউনিয়নে নেতৃত্বের অভাব দেখা দিলে আমি এবং মরহুম শাহজাহান খান ফিরোজ সাহেবকে সুলতানপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হওয়ার প্রস্তাব করলে তিনি অপারগতা প্রকাশ করার পরও তাকেই চেয়ারম্যান যোগ্য মনে করে ইউনিয়নবাসীর জনসমর্থনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা হয়। সেই হিসেবে আমার দাবীই ছিলো বেশি। বিগত ২৫ বছর পর্যন্ত তিনিই ইউপি চেয়ারম্যান ছিলেন। সদ্য সমাপ্ত হওয়া উপজেলা চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রতীক না পেয়ে আনারস মার্কা প্রতীকে বিদ্রোহী প্রার্থী হন। তখন তিনি সুলতানপুর ইউনিয়নে ঘোষণা করেন তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান পদে জয়ী হলে এ ইউনিয়ন উন্মুক্ত করা হবে। জনগণের ভোটে যে নির্বাচিত চেয়ারম্যান হবে আমি তাকেই মালা পরিয়ে বরণ করে নিব। তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হলে তার ছেলেকে সুলতানপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান প্রার্থী ঘোষণা করেন যা ইউনিয়নবাসী ক্ষোভে জ্বলে উঠে। আমাদেরকে বলেন শেখ হাসিনাকেতো ইজ্জত দিতে হয়। তখন তাকে বলি উপজেলা নির্বাচনেতো আপনি আনারস দিয়ে নৌকা ডুবাইছেন। এখন বলছেন নৌকার ইজ্জতের কথা। আনারস মার্কা চেয়ারম্যান প্রার্থী শেখ মো. মহসীন বলেন নির্বাচন সুষ্ঠু হলে আনারস মার্কা বিপুল ভোটে জয়ী হবে। তিনি আরো বলেন আওয়ামীলীগ থেকে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পাওয়া শেখ ওমর ফারুক বিভিন্নভাবে জনগণকে ভয় দেখিয়ে কেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন । নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্যে ৭ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। এর মধ্যে মীর মো. মহসীন মিয়া, সুধীর চন্দ্র ঘোষ ও মো. জসিম উদ্দিন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। এই ইউনিয়নের মোট ভোটার ২১ হাজার ২৯৪। পুরুষ ১০ হাজার ৯২৯ আর মহিলা ১০৩৬৫। ১০টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন